1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
পৃথিবীকে গুরুত্ব দিয়ে এডিবির সেফগার্ড পলিসি সংশোধনের দাবিতে সুনামগঞ্জে অভিনব কর্মসূচী পরকীয়ার অভিযোগে স্ত্রীকে খুন করার ঘটনায় স্বামীর যাবজ্জীবন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি অব্যাহত! সুনামগঞ্জে প্রাণ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কার্যক্রম শুরু গরমে অতি উচ্চ ঝূকিতে শিশুরা, ইউনিসেফের সতর্কতা কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট সোনার দাম ২১০০ টাকা কমলো প্রতি ভরিতে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ভুতুড়ে বিলে দুশ্চিন্তায় দিনমজুর কবীর দিরাই-শাল্লায় উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক পেলেন ২৯ প্রার্থী সুনামগঞ্জের চার উপজেলায় ৫৫জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ

অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবী: ড. মুহস্মদ জাফর ইকবাল

  • আপডেট টাইম :: বুধবার, ৭ মার্চ, ২০১৮, ২.০৬ পিএম
  • ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

অপারেশন থিয়েটারে শুয়ে আছি, মাথার উপর উজ্জ্বল আলো। আমাকে ঘিরে ডাক্তার নার্স তার সাথে অনেক মানুষ, অনেকে আকুল হয়ে কাঁদছে। ডাক্তার নার্স সবাইকে বের করার চেষ্টা করতে করতে আমাকে বললেন, ‘আপনার ইনজুরিটা কতটুকু গুরুতর বুঝার জন্য, রক্ত বন্ধ করার জন্য আপনাকে জেনারেল এনেসথিয়া দিতে হবে।’

আমি একবারও জ্ঞান হারাইনি, মাঝে মাঝে যখন মনে হয়েছে অচেতন হয়ে যাবো দাঁতে দাঁত কামড়ে চেতনা ধরে রেখেছি। কেন জানি মনে হচ্ছিল অচেতনতার অন্ধকারে একবার হারিয়ে গেলে আর ফিরে আসবো না। আমি অবুঝের মতো ডাক্তারদের বললাম, ‘ না আমাকে জেনারেল এনেসথিয়া দেবেন না, যা করতে চান এভাবেই করুন।’ ডাক্তার বললেন, ‘অনেক কষ্ট হবে-’ আমি বললাম ‘হোক।’ ডাক্তার বললেন, ‘সেই যন্ত্রনায় আপনি এমনিতেই জ্ঞান হারাবেন!’

আমার হাতে পায়ে সূচ ফুটিয়ে তখন রক্ত স্যালাইন দেয়া শুরু হয়েছে। তার সাথে তারা অন্য কিছু দিলেন, আমি কিছু বুঝার আগে অচেতন হয়ে গেলাম।

এক সময় আবছা আবছাভাবে চোখ খুলে তাকিয়েছি, আবছা অন্ধকার, মুখের কাছে ঝুকে কেউ কিছু একটা বলছেন, শুনতে পাচ্ছি কিন্তু বুঝতে পারছি না। ভালো করে তাকালাম, মানুষটি আমাদের শিক্ষামন্ত্রী আমি তাকে নাহিদ ভাই ডাকি। আমি তাঁর কথা বোঝার চেষ্টা করলাম, তিনি আমাকে সাহস দিচ্ছেন। বলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে ঢাকা নেয়ার জন্য হেলিকপ্টার পাঠিয়েছেন।

আমি চেতনা এবং অচেতনার মাঝে ঝুলে আছি। টের পেলাম আমাকে স্ট্রেচারে শুইয়ে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমাকে কোথায় জানি তোলা হল, আশেপাশে সামরিক পোষাক পড়া মানুষ। আমার কম বয়সী সহকর্মীদের কেউ কেউ আছে। আবছা অন্ধকারে হেলিকপ্টারের ইঞ্জিনের গর্জন শুনতে পেলাম। গর্জন বেড়ে উঠলো- নিশ্চয়ই আকাশে উড়তে শুরু করেছি।ঘুমিয়ে আছি না জেগে আছি জানি না। আবছা অন্ধকারে অনেকে চুপচাপ বসে আছে। তার মাঝে শুধু ইঞ্জিনের গর্জন। যাচ্ছি তো যাচ্ছি। মনে হয় বুঝি যোজন যোজন পাড় হয়ে গেছে।

এক সময় ইঞ্জিনের শব্দ থেমে গেলো। নিশ্চয়ই ঢাকা পৌছে গেছি। মানুষজন ছুটাছুটি করছে। আমাকে নামানো হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে নামিয়ে আমাকে একটা ট্রলি বা স্ট্রেচারে শোয়ানো হয়েছে। ওপরে খোলা আকাশ সেই আকাশে একটা ভরা চাঁদ। কি অপূর্ব একটি দৃশ্য! আমি সেই চাঁদটির দিকে বুভুক্ষের মত তাকিয়ে রইলাম! পৃথিবী এতো অবিশ্বাস্য সুন্দর?

খোদা আমাকে এই অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবীটিকে আরো কয়দিন দেখতে দেবে?

৭ মার্চ, ২০১৮
মুহম্মদ জাফর ইকবাল: লেখক, শিক্ষাবিদ।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!