1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:৪১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

হাজারো জনতার সুধী সমাবেশে পরিকল্পনামন্ত্রী : আমি সুনামগঞ্জকে ভালোবাসি

  • আপডেট টাইম :: শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১.০৩ পিএম
  • ২৭৮ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদ লাভ করায় পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে দেওয়া সুধী সমাবেশে সংবর্ধনার জবাবে সুধী সমাবেশে তিনি বলেন, আমাকে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ে অপবাদ দেওয়া হয়েছে। অপপ্রচার করা হয়েছে। আমি আজ আর্জি নিয়ে আপনাদের কাছে এসে বিচারের কাঠগড়ায় দাড়িয়েছি। তিনি উপস্থিত হাজারো জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কোন জিনিষটা সুনামগঞ্জ শহর থেকে কেটে শান্তিগঞ্জে নিয়ে গেছি। আপনারা প্রমাণ দিতে পারলে তওবা করে রাজনীতি ছেড়ে দেব। আমি আপনাদের কাছে বিচার চাই। মন্ত্রী বলেন, অহেতুক আমাকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে। আমি সুনামগঞ্জকে ভালোবাসি, ভালোবাসি সারাদেশকে। ১২ ডিসেম্বর শনিবার সুনামগঞ্জ আব্দুজ জহুর সেতুর পশ্চিম পারে হাউজিং মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এসব কথা বলেন। সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ ও সদর উপজেলা পরিষদ এই সুধীসমাবেশের আয়োজন করে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্না উপস্থিত হাজারো জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা বিচার করুন, কেন আমার উপর কলঙ্ক লেপন করা হয়েছে। কিন্তু আমি সবসময় আমার ক্ষুদ্র শক্তি নিয়ে চেষ্টা করেছি সুনামগঞ্জের উন্নয়নে। আমার জেলাকে আমি ভালোবাসি। মন্ত্রী বলেন, আমি সুনামগঞ্জ শহর থেকে কিছুই ছিনিয়ে নেইনি। সুনামগঞ্জের উন্নয়নেও কোন ক্ষতি করিনি। শান্তিগঞ্জ নয় হাওরের মানুষের খেদমত করাই আমার জীবনের স্বপ্ন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার চল্লিশ বছরের পরিচয় তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পরিচালনা করেন। তিনি আমাকে মূল্যায়ণ করেন। ৪০ বছর আগে তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল। তিনি জানেন আমি কি চাই, আমিও জানি তিনি আমার কাছে কি আশা করেন। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
বিশ্ববিদ্যালয় স্থান প্রস্তাব প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এত আলোচনা। এটা সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সরকারের অর্থ বাঁচাতে আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম শান্তিগঞ্জের টান জমিতে স্থাপনের জন্য। কারণ ওই জমিতে ফসল হয়না। মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতি হবেনা। ভরাট করে সরকারের বিরাট অর্থ অপচয় হবেনা। মন্ত্রী বলেন, যে কোন নাগরিকই প্রস্তাব করতে পারে। আমিও সেই নাগরিক হিসেবে শান্তিগঞ্জের পাশে খোলা জায়গায় প্রস্তাব করেছিলাম।
নিজের রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, আমি রাজনীতির লোক নই। আমি উন্নয়নের লোক। আমার জীবনে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তার দল নিজ জেলার উন্নয়নে রাজনৈতিকভাবে বাধা দিয়েছে তার নজির নেই। কিন্তু আমার বেলায় সেটা হয়েছে। এটা কিভাবে করতে পারল শিক্ষামন্ত্রী অবগত হয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশের কোথাও আর এটা হয়নি। মন্ত্রী বলেন, আমার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যখন অপরাজনীতি ও অপপ্রচার করা হয় আমি তখন করোনা আক্রান্ত হয়ে মরণাপন্ন অবস্থায় ছিলাম। এই সময়ই বেছে নিয়ে আমাকে অপবাদ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, আমি ষড়যন্ত্রকারীদের মতো এ বিষয়ে কোন কোন ষড়যন্ত্র করি নাই। যদি করতাম তাহলে মেডিকেল কলেজ সদরে দিতামনা। কারণ এটার জন্য কোন আইন পাশ করতে হয়না। আমি নিজেই এটা আমার বাড়িতে করতে পারতাম। কিন্তু আমি চেয়েছি দিরাই, শাল্লা, ধর্মপাশাসহ সুনামগঞ্জের অবহেলিত মানুষ যোগাযোগের এই সুন্দরন স্থানটির সুবিদা নিকে।
টেক্সটাইল কলেজ শান্তিগঞ্জ নিয়ে গেছি যারা এসব বলে তাদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আমার দলের নেতা ও মন্ত্রী মির্জা আজম যখন মন্ত্রী তখন তিনি আমার কাছে আসেন। বলেন, ২০টি টেক্সটাইল কলেজ হবে। একটি আপনার উপজেলায় দিতে চাই। তিনিই এই কলেজটি আমার উপজেলায় দিয়েছিলেন। দক্ষিণ সুনামগঞ্জের যোগাযোগ অবকাঠামোগত সুবিধার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ এক সময় কিছুই ছিলনা। রাস্তার পাশে এমন একটি উপজেলা জেলার কোথাও নাই। তাই আমি মন্ত্রী না হলেও সরকার এখানে উন্নয়ন করতো। এখানে যা হচ্ছে এমএ মান্নান নয়, সরকার উন্নয়ন করছে।
মন্ত্রী সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাকে সন্দেহ করবেন না। নিজেদের মন পরিষ্কার করুন। আমি আপনাদের বাড়া ভাতে ছাই দেইনি। সুনামগঞ্জের উন্নয়নে আমার আরো বড় পরিকল্পনা আছে। ৭-৮মাস পরেই দুই ঘন্টা কম সময় অতিবাহিত করে রাণীগঞ্জ সেতু পেরিয়ে আমরা ঢাকা যাব। মন্ত্রী আরো বলেন, সুনামগঞ্জের উন্নয়ন দেখে সিলেটিরা হিংসে করার কথা ছিল। কারণ তাদের অনেকেই আমাদেরকে ভাইট্যল্যা হিসেবে ট্রিট করে। কিন্তু তারা সেটা করেনি। করেছে জেলার কিছু মানুষ। মন্ত্রী বলেন, আমি জীবনে সুনামগঞ্জের কোন ক্ষতি করবনা। আমি পুরো উদ্যোম নিয়ে কাজ করব। যারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে তারার বিরুদ্ধে আপনারা আজ জবাব দিছেন। আপনারা আমাকে সম্মান দিয়েছেন।
এছাড়াও মন্ত্রী পদ্মা সেতু বিষয়ে শেখ হাসিনার দূরদর্শি নেতৃত্ব ও সাহসের প্রশংসা করেন। পাকিস্তানীরা আমাদের লুণ্টন করে নিঃস্ব করেছিল। আমরা সেখান থেকে ঘুরে দাড়িয়েছি। আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলকে শেখ হাসিনার কর্মী বদলে দেওয়ার কাজ করছি। আমরা গরিব ও সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছি।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের সভাপতিত্বে, সবুজ কান্তি দাস ও রনজিত চৌধুরী রাজনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অবনী মোহন দাস, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শামীম আহমদ চৌধুরী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজি আবুল কালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজাদ, পৌর কলেজের অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ, ইসলামগঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাজিনুর রহমান, গৌরারং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন আলী প্রমুখ।
সভায় সুধীজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবি হুমায়ূন মঞ্জুর চৌধুরী, সাবেক এমপি এডভোকেট শাহানা রব্বানী পিপি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জিয়াউল হক, ধরমপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রোকন, জামালগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রবিউল লেইস রোকেস, ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি তনুজ কান্তি দে, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য এডভোকেট কল্লোল তালুকদার চপল, ছাত্র লীগ জেলা সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট বুরহান উদ্দিন, প্রমুখ।
সুধীসমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্র লীগসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সুধী সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!