বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের পর্যটকবান্ধব দৃষ্টিনন্দন সীমান্তনদী জাদুকাঁটায় চলছে পরিবেশ বিপন্ন করে অবৈধভাবে নদীর দুই তীর কেটে ও সেইভ মেশিনে বালুপাথর লুটের কর্মযজ্ঞ।
সময় সুযোগে রাতে দিনে নদীর মধ্যে নদীর তীওে সেইভ মেশিনে ও নদীর কেটে বালু পাথর উক্তোলনের পর নদীর তীরেই ডিপোতে রেখে এসব বালু পাথর বিক্রি করা হচ্ছে নির্ঞ্ঝাঝাটহীন ভাবে।
নদীর দু’তীরের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে কয়েক হাজার কোটি টাকা মুল্যেও লুটে নেয়া বালু পাথরের সারি সারি ডিপো।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার মাণিগাঁও শিমুল বাগানের র্পুব দক্ষিণ থেকে জাদুকাঁটার নদীর বড়টেকের পাকা সড়কের সামনে, পাশে থাকা আর্দশ গ্রামের সরকারি পুকুর হয়ে গ্রামের ভেতরে, বড়ইবাগ অবধি নদীর তীর ও নদীর মধ্যখানে প্রতিদিন সকালে ১৫০ থেকে ২০০ পরিবেশ ধ্বংসকারী শেলো ইঞ্জিনচালিত সেইভ মেশিনে বালুপাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করছে প্রভাবশালী কয়েকটি মহল।
তারা নদীর তীর কেটে বালু পাথর বিক্রি ও চাঁদাবাজির উৎসবে মেতেছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, দৃষ্টিনন্দন জাদুকাটা নদীর দু’তীর জুড়ে রয়েছে অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু-পাথর সহস্রাধিক ডিপো। সেখানে বিন্নাকুলি বাজারের উত্তরদিক সংলগ্ন জাঙ্গালহাটির সামনে শতাধিক সেইভ মেশিনে বালুপাথর উত্তোলন হয়।
জাদুকাটার বড়টেক পাকা সড়কের সামনে থেকে পেছনে দক্ষিণে গুচ্ছ গ্রাম অবধি নদীর তীর কেটে বালু লুটের কারনে গুচ্ছ গ্রাম এখন ছোট ছোট পুকুরে খালে পরিণত হয়েছে।
নদীর তীর ঘেষা সরকারি খাঁস খতিয়ানভুক্ত বালু ভুমি ও নদীর তীর নদীর মধ্যবর্তী অংশ নিজের মালিখানা দাবি করে কেউ কেউ নগদ টাকার আশায় তীর কেটে বালু পাথর লুটে বালু পাথর ব্যবসায়ী সিন্ডিক্যাটের সদস্যদের সহযোগীতা করে যাচ্ছেন।
এমন বালুপাথর অবৈধভাবে উত্তোলন, ক্রয়-বিক্রয় কাজে স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন এমনকি পরিবেশ অধিদফতর বছরের পর বছর নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
জাদুকাটা সীমান্ত নদী হলেও দায়িত্বশীল সীমান্ত এলাকার বিজিবি সদস্যদের এ বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে দেখা যায়নি এখন পর্যন্ত।
অভিযোগ রয়েছে, এসব অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুপাথর দেশের নানা প্রান্তে নৌ-পথে পরিবহন ও বিক্রয়কালে ইজারাদারকতৃক রয়্যালিটি আদায় করা হচ্ছে।
এছাড়াও তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির আওতাভুক্ত নৌ-পথে প্রশাসনসহ নামে বেনামে বিনা রশিদে ১ টাকা থেকে ৩ টাকা ঘনফুট হারে নৌ পরিবহনগুলো থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
একটি সংঘবদ্ধ চক্র নিয়মিত তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির নামেও বালু বোঝাই ইঞ্জিনচালিত ট্রলার, বলগেট নৌকা থেকে প্রতি ঘনফুট বালুর জন্য পৃথকভাবে ১ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে আসছে বলে নানামুখী অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি বিট অফিসার ও জাদুকাটা নদীর তদারকিতে থাকা এএসআই জহিরের বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার রাতে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
বুধবার সুনামগঞ্জ পুািলশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, জাদুকাটা নদীর তীর কাঁটা. সেইভ মেশিনে বালু পাথর উক্তোলন বন্ধ করণের বিষয়টি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের এখতিয়ারভুক্ত , নদীতে এসব অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে প্রশাসন থেকে পুলিশী সহযোগীতা চাওয়া হলে তা করা হবে।
তিনি আরো বলেন, বালু পাথর থেকে অবৈধ ভাবে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি আমার নিকট কেউ অভিযোগ করেননি তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।,
বুধবার সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আবদুল আহাদ এ প্রতিবেদকে বলেন, জাদুকাটা নদীতে সেইখ মেশিনে বালু পাথর উক্তোলন তীর কাটা বন্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) সহ পুলিশ সুপারকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া আছে। নদীর তীর কাটা ও অবৈধভাবে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বালু পাথর উক্তোলনে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন প্রয়োজনে তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করা হবে।,