স্টাফ রিপোর্টার:
স্বাধীন বাংলার প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আব্দুস সামাদ আজাদের ১৩ তম মৃত্যুকার্ষিকী পালিত হয়েছে। শুক্রবার সুনামগঞ্জ জেলা শহর, তার জন্মস্থান জগন্নাথপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তার রাজনৈতিক ভক্তরা মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা করেছেন। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হারলেও তার শেষ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন।
আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ দলীয় কার্যালয়ে, আরেক অংশ আব্দুস সামাজ আজাদ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করে। এছাড়াও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নোয়াখালী বাজারে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন তার রাজনৈতিক ভক্তরা। বাদ জুমআ সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে আলোচনাসভার আয়োজন করে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী। তিনি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে আমতৃ্যু দায়িত্ব পালন করেছেন। মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে তার সিদ্বান্ত অনুযায়ী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে সুনামগঞ্জ সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের শীর্ষ নেতা ছিলেন তিনি।
আব্দুস সামাদ আজাদ ১৯২২ সালের ১৫ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম ভুরাখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪০ সালে সুনামগঞ্জ জেলা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৪৬ সালে একই সংগঠনের অবিভক্ত আসামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট থেকে এমএলএ নির্বাচিত হন এবং আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং সর্বদলীয় রাজনৈতিক জোট এনডিএফ-এর দপ্তর সাম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ এর নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে এমএনএ নির্বাচিত হন। ৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনে বিশেষ ভুমিকা পালন করেন। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়াসহ নানা কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৯৬ এর জনতার মঞ্চের অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে বিরোধী দলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন আব্দুস সামাদ আজাদ। ২০০১ সালের শেষ নির্বাচনে দল হারলেও আব্দুস সামাদ আজাদ সুনামগঞ্জ-৩ আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন।