স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাও গ্রামের ঝুমন দাস আপনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ৫ সেপ্টেম্বর রবিবার ঝুমন দাসের আইনজীবীর জামিন আবেদন নাকচ করে দেন শাল্লা আমল গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইশরাত জাহান।
ঝুমন দাসের আইনজীবী এডভোকেট পঙ্কজ তালুকদার জানান, ২০২০ সালের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন নেতা মামুনুল হকের সমাবেশে ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের বিরুদ্ধে উস্কানীর অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট দেন ঝুমন। এতে দিরাই-শাল্লা উপজেলার ৬টি গ্রামের হাজারো মানুষ ‘মামুনুলের একশন, বাবু নগরীর একশন’ বলে ঝুমনের গ্রাম নোয়াগাওয়ে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ হামলা করে। তারা গ্রামের ৮৮টি ঘর ও ৫টি পারিবারিক মন্দির ভাংচুরসহ গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ি লুট করে। এর আগের দিন রাতে ঝুমনকে আটক করে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দেয় পুলিশ। ১৯ মার্চ নোয়াগাও গ্রামে হামলার ঘটনায় গ্রামবাসী ও পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় হামলকারী ৬টি গ্রামের দেড় হাজার মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় শতাধিক আসামি জেল খেটে এখন জামিনে আছে। আইনজীবী আরো জানান, গত ২৮ আগস্ট ঝুমন দাস একটি ভাইরাল স্টেটাস নিজের একাউন্টে পোস্ট করার কারণে গত ৩০ আগস্ট সকালে তাকে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। রাতে তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে আবারও মামলা দায়ের করে। এই মামলায় ৩১ আগস্ট ঝুমনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। বর্তমানে ঝুমন জেল হাজতে রয়েছে।
এডভোকেট পঙ্কজ দাস বলেন, আমরা আদালতে রবিবার ঝুমন দাসের জামিন চেয়েছিলাম। যে অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আমরা আদালতকে বলেছি তার সঙ্গে সেই অভিযোগ যায়না। কারণ এই পোস্টে কোন ধর্ম অবমাননা বা উস্কানীমূলক কিছু ছিলনা। আমরা আদালতে সেসব প্রমাণ হাজির করেছি। কিন্তু আদালত আমাদের আসামিকে জামিন দেননি।
এদিকে ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে নতুন মামলা নিতে শাল্লা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম হিন্দু ধর্মাবলম্বিসহ এই ধর্মের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাদী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা রাজি না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা নিয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।