হাওর ডেস্ক ::
কভিড মহামারি প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন নতুন শতকোটিপতি তৈরি করেছিল। আর এখন একই গতিতে দশ লাখ করে মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংগঠন অক্সফাম সুইজারল্যান্ডের দাভোস শীর্ষ সম্মেলনের প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার একথা বলেছে।
অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘শতকোটিপতিরা তাদের অর্থসম্পদের অবিশ্বাস্য বৃদ্ধি উদযাপন করতে দাভোসে আসছেন।
মহামারি এবং এখন খাদ্য ও জ্বালানির দামের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি সোজা কথায়, তাদের জন্য বিশাল বর হয়ে এসেছে। ’
কভিডের কারণে দুই বছরের অনুপস্থিতির পরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দিতে বৈশ্বিক অভিজাতরা সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য শহর দাভোসে সমবেত হচ্ছেন। এ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম বলছে, দরিদ্রদের সহায়তা করার জন্য ধনীদের ওপর কর আরোপের সময় এসেছে।
অক্সফাম বলেছে, এ বছর ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়বে বলে তাদের আশঙ্কা। এর অর্থ হচ্ছে প্রতি ৩৩ ঘণ্টায় দশ লাখ হারে মানুষ চরম দরিদ্র হবে। করোনার প্রভাবের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির চাপ যুক্ত হয়ে জীবনযাত্রার ব্যয়কে সংকটের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তুলনা করে অক্সফাম বলেছে, করোনা মহামারি চলাকালে ৫৭৩ জন শতকোটিপতি হয়েছেন যা প্রতি ৩০ ঘন্টায় একজন।
বুচার বলেন, ‘চরম দারিদ্র্য দূর করায় কয়েক দশকের অগ্রগতি এখন বিপরীত পথে। লাখ লাখ মানুষ কেবল বেঁচে থাকার ব্যয়ের ক্ষেত্রে অসম্ভব বৃদ্ধির সম্মুখীন হচ্ছে। ’
ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের মুখোমুখি মানুষদের সহায়তা করতে অক্সফাম শতকোটিপতিদের মহামারিকালে অর্জিত মুনাফার ওপর একদফার ‘সংহতি কর’ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি মহামারি থেকে ‘ন্যায্য এবং টেকসই পুনরুদ্ধারের’ জন্য তহবিল গঠনে সহায়তার তাগিদ দিয়েছে।
অক্সফাম আরো বলছে, বড় কর্পোরেশনগুলোর ফাটকা মুনাফার ওপর ৯০ শতাংশের ‘সাময়িক অতি মুনাফা কর’ চালু করে ‘সঙ্কটকালীন মুনাফাখোরির অবসান ঘটানোর’ সময় এসেছে।
অক্সফাম আরো বলছে, কোটিপতিদের ওপর বার্ষিক দুই শতাংশ এবং শত কোটিপতিদের ওপর পাঁচ শতাংশ সম্পদ কর আরোপ হলে বছরে আড়াই লাখ কোটি ডলারের সংস্থান হতে পারে। এ পরিমাণ সম্পদ কর দিয়ে ২ শ ৩০ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করা, সারা বিশ্বের জন্য পর্যাপ্ত টিকা তৈরি করা এবং দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অর্থ সংস্থান করা সম্ভব হবে।
ফোর্বসের শত কোটিপতির তালিকা এবং বিশ্বব্যাংকের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তার হিসাব তৈরি করেছে অক্সফাম। সূত্র: এএফপি