1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
৪২ হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে সার্ভে শুরু: অক্ষত বাঁধকে বিক্ষত না দেখানোর দাবি কৃষকদের বিপ্লব ও সংহতি দিবসের অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জ-৪ আসনে নূরুলকে প্রার্থী ঘোষণার দাবি তৃণমূলের জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাজিল গেলেন রাজীব চৌধুরী সুনাগঞ্জসহ সিলেটের ১৪ টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা জেলায় মোট ভোটার ২০ লাখ ৫০ হাজার ৯৯৪ জন, বেড়েছে ১ লক্ষ ২৮ হাজার ৮২৫জন জনগণ আমার একাউন্ট, আমি তাদের গোলাম : কামরুজ্জামান কামরুল সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ডিআইজি এহসানউল্লাহ মুসলিম দেশগুলো গাজা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তুরস্কে বৈঠক করবে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বাংলাদেশ ব্যাংকের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি: ২.৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিল চক্র

বঙ্গবন্ধুর আদর্শই বাস্তবায়ন হোক

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২, ১১.৩৯ এএম
  • ২০৪ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশে ফিরে আসার দিন ১০ জানুয়ারি। পাকিস্তানের কারাগারে দীর্ঘ কারাবাস শেষে বাঙালির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯৭২ সালের এদিনে স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেই থেকে জাতির পিতার ফেরার দিনটি ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। একই সঙ্গে ৯ মাসের সশস্ত্র ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন হলেও প্রকৃতপক্ষে তার দেশে ফিরে আসার মধ্য দিয়েই বাঙালির বিজয় পূর্ণতা লাভ করে।

এ বছর বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে মাত্র কয়েকদিন আগে জাতি উদযাপন করেছে এই মহান নেতার জন্মশতবার্ষিকী। একই সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও। গুরুত্বের আরেকটি কারণ হচ্ছে, তার সারাজীবনের স্বপ্ন ছিল মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং বিশ্বে বাংলাদেশ সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। আজ সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। এসব কারণেই এবারের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন তাৎপর্যময়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যেও এখন বাংলাদেশ অর্থনীতির সব সূচকে ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। একই সঙ্গে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হয়েছে। দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষার অগ্রগতি ও অর্জন বিশ্বের কাছে বিস্ময়ও বটে।

দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফেরেন বিজয়ী বীর হিসেবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার সামরিক বাহিনী শান্তিপ্রিয় নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। তিনি সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে সশস্ত্র সংগ্রামে। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের দখলদার সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে আটক রাখে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের কারাগারে গোপন বিচারের মাধ্যমে তার ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছিল এবং কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠের সামনেই তার জন্য কবর পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছিল। কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন দৃঢ়, অবিচল। এই শক্তি, অনুপ্রেরণার মূলে ছিল বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তার অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। মুক্তিকামী বাঙালির সব আবেগ, উচ্ছ্বাসকে নিজের হৃদয়পটে ঠাঁই দিয়ে তিনি ছিলেন এক আপসহীন লক্ষ্যে স্থির মুক্তির দিশারি। বাঙালি জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর সীমাহীন আস্থা এবং তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বঙ্গবন্ধুকে সর্বদাই রেখেছে দৃঢ়চিত্ত, উন্নত শির, অসীম সাহসী। মূলত বঙ্গবন্ধুর এই অসীম সাহস, শক্তি, অনুপ্রেরণার মূলে ছিল মানুষের ভালোবাসা, বিশ^াস ও আস্থার উৎস। বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের নেতা শেখ মুজিব বাঙালির ভালোবাসার গ-ি ছাড়িয়ে পুরো বিশে^র স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও মুক্তিকামী মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেন। বিশ্ববাসীর ভয়ে নির্যাতিত মানুষের এই অবিসংবাদিত নেতার ফাঁসি কার্যকর করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ব্রিটেনের রাজকীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছে ভারতের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ভিভি গিরি ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রদত্ত ভাষণে বলেছিলেন, ‘এ অভিযাত্রা অন্ধকার থেকে আলোয়, বন্দিদশা থেকে স্বাধীনতায়, নিরাশা থেকে আশার অভিযাত্রা। অবশেষে আমি ৯ মাস পর আমার স্বপ্নের দেশ সোনার বাংলায় ফিরে যাচ্ছি। এই ৯ মাসে আমার দেশের মানুষ শতাব্দীর পথ পাড়ি দিয়েছে। আমাকে যখন আমার মানুষদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তখন তারা কেঁদেছিল; আমাকে যখন বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তখন তারা যুদ্ধ করেছিল। আর আজ যখন আমি তাদের কাছে ফিরে যাচ্ছি, তখন তারা বিজয়ী। আমি ফিরে যাচ্ছি তাদের নিযুত বিজয়ী হাসির রৌদ্রকরে। আমাদের বিজয়কে শান্তির, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করার যে বিরাট কাজ এখন আমাদের সামনে- তাতে যোগ দিতে আমি ফিরে যাচ্ছি আমার মানুষের কাছে।’

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার স্বপ্নের স্বাধীন স্বদেশে ফিরে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বলেছিলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, যারা বর্বর বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন- তাদের আত্মার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। লক্ষ মানুষের প্রাণদানের পর আজ আমার দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ আমার জীবনের স্বাদ পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার প্রতি জানাই সালাম। আমার বাংলায় আজ এক বিরাট ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে। ৩০ লক্ষ লোক মারা গেছে। ইয়াহিয়া খান আমার ফাঁসির হুকুম দিয়েছিলেন। আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান। বাঙালিরা একবারই মরতে জানে। তাই আমি ঠিক করেছিলাম, আমি তাদের কাছে নতি স্বীকার করব না। ফাঁসির মঞ্চে যাবার সময় আমি বলব- আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। তাদের আরও বলেছি, তোমরা মারলে ক্ষতি নাই। কিন্তু আমার লাশ বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে দিও।’ কিন্তু বিশ^জনমত বঙ্গবন্ধুর পক্ষে থাকায় পাকিস্তানি জান্তারা তাকে ফাঁসিতে ঝোলাতে পারেনি।

আজকের এই দিনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের অপরাপর শহীদ সদস্যদের। প্রত্যাশা থাকবে জাতির আগামী দিনের পথ চলায়, রাষ্ট্র পরিচালনায়- যে কোনো উন্নয়ন অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শই হবে অন্যতম পাথেয়। তবেই জাতির পিতার আত্মত্যাগ সার্থক হবে এবং তার বিদেহী আত্মা শান্তি পাবে।

মোতাহার হোসেন : সাংবাদিক ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!