শাল্লা প্রতিনিধি:
আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় শাল্লায় ঘর নির্মাণের মালামাল সরবরাহকারী দুই ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান ও এক শ্রমিকের কোটি টাকা আত্মাসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মুক্তাদির হোসেনের বিরুদ্ধে। মালামাল সরবরাহের বরাদ্দকৃত টাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে না দেওয়ায় মেসার্স অয়ন্তী এন্টার প্রাইজের পরিচালক বাদল চন্দ্র দাস, মেসার্স এমবিএম এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ফজলুল করিম ফজল ও গৃহ নির্মাণ শ্রমিক আলম মিয়া কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত বুধবার ১২ টায় পৃথক পৃথকভাবে লিখিত এই অভিযোগগুলো দাখিল করা হয়।
অভিযোগ উল্লেখ করা হয়, শাল্লা উপজেলায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীন গৃহহীনদের জন্য ১৪৩৫টি গৃহ নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। প্রত্যন্ত হাওর অঞ্চলে “আশ্রয়ণ-২” প্রকল্প গৃহ নির্মানের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন গৃহ নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের জন্য মেসার্স অয়ন্তী এন্টার প্রাইজের পরিচালক বাদল চন্দ্র দাস এবং মেসার্স এমবিএম এন্টারপ্রাইজের পরিচালক ফজলুল করিম ফজল-কে ইট, বালু, খোয়া সহ প্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহের দায়িত্ব দেন।
তাই দায়িত্ব পাওয়ার পর ঠিকাদার বাদল দাস ইউএনও আল মুক্তাদিরকে ৩ কোটি ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ৯’শ টাকার গৃহ নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করেন। পরে ইউএনও ক্রস্ড চেকের মাধ্যমে মেসার্স অয়ন্তী এন্টারপ্রাইজকে ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। ৪৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯’শ টাকা পাওনা রয়ে যায়। অপরদিকে আরেক ঠিকাদার ফজলুর করিম ৩ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার ২’শ ৫০ টাকার মালামাল সরবরাহ করেন এবং ক্রস্ড চেকের মাধ্যম মেসার্স এমবিএম এন্টারপ্রাইজকে ২ কোটি ৭ লাখ পরিশোধ করেন।
একই ভাবে এই প্রতিষ্ঠানেরও ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ২’শ ৫০ টাকা বকেয়া রয়ে যায়। অন্যদিকে গৃহ নির্মাণ শ্রমিক আলম মিয়াকে ১০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা চুক্তিতে ৩৭টি গৃহ নির্মাণের কাজ সমঝিয়ে দেন। আলম মিয়ার নির্ধারিত সময়ে ৩৭টি গৃহ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ইউএনও বিভিন্ন সময়ে ক্রস্ড চেকের মাধ্যমে ৭ লাখ ৮১ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বকেয়া রয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাওনা টাকার জন্য বারবার যোগাযোগ করলেও টালবাহানা শুরু করে নানা ফন্দিফিকির করতে থাকেন।
অভিযোগকারী বাদল চন্দ্র দাস বলেন, বিশ্বস্থ সূত্রে জানতে পারি আমাদের মালামাল সরবরাহের বরাদ্দকৃত টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু ৩/৪ মাস পেরিয়ে গেলেও আমাদের টাকা দিতে আগ্রহী নন তিনি। শুধু তাই নয় কিছু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শতশত ভাগ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। আর আমরা ঋণ করে বাড়ি ছাড়া রয়েছি। টাকা পয়সা না ফেলে ঋণের দায়ে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, শুনেছি অভিযোগ হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেই প্রকল্পের টাকা উত্তোলণ করা হয়েছে। অভিযোগ যেহেতু হয়েছে অবশ্যই আমাকে অবগত করা হবে।