বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের ১২ তম উপজেলা হিসেবে নিকারের গত ২৬ জুলাইয়ের সভায় অনুমোদনপ্রাপ্ত মধ্যনগর উপজেলা পরিদর্শন করেছেন সরকারেরই দুই মন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার সচিব। শনিবার দুপুরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি ও স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ মধ্যনগর পরিদর্শন করেছেন। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, মধ্যনগর উপজেলা বাস্তবায়ন পরিষদসহ স্থানীয় উপজেলাবাসী তাদেরকে মধ্যনগর বাজারে বিশাল সংবর্ধনা দিয়েছেন। অতিথিদের সম্মানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্টানেরও আয়োজন করা হয়। অতিথিবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মধ্যনগরবাসীর স্বপ্নপূরণ করে উপজেলার উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করেন। অতিথিদের সম্মানে মধ্যনগরে বেশ কিছু তোরণ নির্মাণ করা হয়। ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে যায় এলাকা। দুর্গম হাওর পারি দিয়ে লাখো জনতা অংশ নেন। তারা নেচে গেয়ে মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নতি করায় আনন্দ উল্লাস করে স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান।

সংবর্ধনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পৌরসভার মেয়র নাদের বখত।সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আপনারা মধ্যনগর উপজেলায় বসেই সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন। কষ্ট করে আর ধর্মপাশা যাওয়া লাগবে না। প্রধানমন্ত্রী আপনাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করেছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় মহিলাদের নিয়ে বিশেষ করে হাওরাঞ্চলের মানুষদের নিয়ে চিন্তা করেন। তিনি আপনাদের প্রতি খুবই আস্তরিক বলেই আপনাদের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য উপজেলা উপহার দিয়েছেন। আপনারা দেশের উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য প্রধানমন্তীকে সাহস ও শক্তি জোগাবেন। কারণ তিনি বাঙালিদের বিশ্বসভায় মাথা উচু করে দাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন, বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে সে স্বপ্ন ছিল তার। স্বপ্নের সোনার বাংলার রূপকার ছিলেন তিনি। এ কারণে বাংলার বন্ধু বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকরা হত্যা করে দেশকে পিছিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ঘাতকদের ষড়যন্ত্র নস্যাত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছি।

১৯৭৪ সালে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর, চামরদানী, বংশীকুণ্ডা উত্তর ও বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ এই চারটি ইউনিয়ন নিয়ে মধ্যনগর থানা গঠিত হয়। ১৯৮৭ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নীত করার জন্য প্রাথমিকভাবে কার্যক্রম শুরু করা হয়। ২০০১ সালের ৯মে নিকার ৮৬তম বৈঠকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করার জন্য অনুমোদন দেন। কিন্তু ২০০৩ সালের ১৮ জানুয়ারি নিকার ৮৮তম বৈঠকের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই অনুমোদনটি বাতিল করে দেন। দীর্ঘ ৩৪ বছর পর গত ২৬ জুলাই প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় এই প্রতীক্ষার অবসান ঘটে।