স্টাফ রিপোর্টার::
বিশাল মঞ্চে আলো হয়ে বসে আছেন সম্মাননাপ্রাপ্ত সম্মানীত শিক্ষকবৃন্দ। সবারই বয়স হয়েছে। রোগ-ব্যাধি বাসা বেধেছে শরিরে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ তাদের অনেকেই। বন্ধু এক্সপ্রেস নামের স্কুল ও কলেজ জীবনের সতীর্থরা তাদের পরম পূজনীয় আলোকিত শিক্ষকদের একত্র করে সম্মাননা দিয়েছেন। শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি হলে এভাবেই মঞ্চে আলো হয়েছিলেন আলোকিত শিক্ষকরা। জীবনের পড়ন্ত বেলায় শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করায় বন্ধু এক্সপ্রেসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অনেকে।
প্রফেসর পরিমল কান্তি দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সম্মাননা অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পৌর মেয়র নাদের বখত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজামের ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মাহির আবরার।
প্রধান অতিথি এমপি পীর মিসবাহ আলোকিত শিক্ষকদের নাম ধরে নানা স্মৃতিচারণ করে। তাদের প্রতি সশ্রদ্ধ অভিনন্দন জানান। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের সমাজব্যবস্থায় এখন শিক্ষকরা আগের মতো সম্মান পাননা। শিক্ষার্থীরাও আগের অবস্থায় নেই। তুচ্চ বিষয় নিয়ে অনেক অভিভাবক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত করতে আসে, তাদের অসম্মান করে। আমাদের সময়ে এসব বিষয় চিজন্তাই করা যেতনা। স্কুলে পিঠুনি খেলে বাড়িতে এসে বললে উল্টো অভিভাবকরাও আমাদের পিটুনি দিতেন। শ্রদ্ধার উচ্চ মার্গে ছিলেন আমাদের শিক্ষকরা। তিনি বলেন, আমাদের ক্ষয়িষœু সামাজিক অবস্থানের কারণে তারা মনে করেন শিক্ষকরা তাদের সমীহ করবেন। অথচ শিক্ষকরা সবার উর্ধে¦। তিনি রাষ্ট্রকাঠামোয় শিক্ষকদের অবমাননার নানা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বিচার বিভাগে একজন জজ সাহেব আইন সচিব হন। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারে অনেক প্রফেসর থাকলেও সেখানে কাউকে শিক্ষাসচিব করা হয়না। এই সচিব, সচিবদের পিএসের সামনে দাড়িয়ে, বেঞ্চে বসে অনেক প্রফেসররা ব্যক্তিগত কাজ করেন। যা দেখলে আমাদের লজ্জা লাগে। তাদের মাথার উপরে আমলা বসিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অসম্মানের।
শিক্ষক সম্মাননা অনুষ্ঠানে আলোকিত শিক্ষকরাও প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। স্কুল ও কলেজ জীবনের নানা স্মৃতিচারণ করেন। বন্ধু এক্সপ্রেস নামের তাদের শিক্ষার্থীদের গড়া সংগঠনের প্রতি শুভ কামনা জানান।
সম্মাননাপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. আব্দুল বারী, অধ্যাপক লক্ষী রাণী দে, অধ্যাপক ন্যাথানায়েল এডউইন ফেয়ারক্রস, অধ্যাপক দীলিপ কুমার মজুমদার, অধ্যাপক নীলিমা চন্দ, সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মু. আব্দুর রহিম, সুনীতি দে, এ. এফ. মাসয়ূদুল হাসান, মো. মকবুল হোসেন, এম. এ ডি রফিক, মো. আব্দুর রউফ, অজয় কুমার চৌধুরী, রবীন্দ্র নারায়ন তালুকদার, মো. মকবুল হোসেন (২), সৈয়দ আমির খসরু অরুন চক্রবর্তী, অনন্ত কুমার সিংহ, এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক ধুর্জটি কুমার বসু, মো. আরশাদ আলী, ইকবাল কাগজী, আলী আহমদ, গোলাম মোস্তফা, বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের দীপক রঞ্জন দাশ, এস এম মাহবুবুল হক, সিরাজুল ইসলাম ও যোগেশ্বর দাশ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাকেণ হিরন্ময় রায়। বন্ধুএক্সপ্রেসের অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার কাউসার তালুকদার, শাহীনুর রহমান শাহিন, স্বপন রায় নকুল, দ্বিগবিজয় দত্ত, সঞ্জিত ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।