1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

বাবার হাত ধরে কারাগার থেকে বের হলেন মিন্নি

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১১.০৭ এএম
  • ১২৮ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি বনে যাওয়া মিন্নি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। সব আইনি প্রক্রিয়া ও দাফতরিক কাজ শেষে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি।
কারাগার থেকে মিন্নি বের হওয়ায় সময় উপস্থিত ছিলেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ও তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর মিন্নিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। মিন্নি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে কারাগার প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয় উৎসুক জনতা। কারাগার প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদস্যরাও।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মিন্নির জামিনের আদেশের কপি বরগুনার আদালতে পৌঁছায়। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষে জামিনের আদেশের কপি কারাগারে পাঠানো হয়।
মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, মিন্নিকে দেয়া হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী জামিনের আদেশের স্বাক্ষরিত কপি দুপুর ১২টার দিকে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এসে পৌঁছে। পরে মিন্নির পক্ষে বেলবন্ড দাখিলের অনুরোধ করা হয়। বিচারক বেলবন্ড গ্রহণ করে কারা কর্তৃপক্ষকে রিলিজ অর্ডার পাঠান। সব দাফতরিক কাজ শেষে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কারামুক্ত হন মিন্নি।
এর আগে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী মিন্নিকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের ওপর সোমবার নো-অর্ডার (কোনো আদেশ নয়) দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। ফলে মিন্নির জামিনে মুক্তিতে বাধা কাটে। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ আদেশ দেন।
গত ২৯ আগস্ট মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না- মর্মে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দুই শর্ত দিয়ে মিন্নির অন্তর্বর্তী স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন।
শর্ত দুটি হলো- ১. জামিনে থাকাবস্থায় মিন্নি তার বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরের জিম্মায় থাকবেন; ২. জামিনে থাকাবস্থায় তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। এই দুই শর্তের ব্যত্যয় ঘটলে মিন্নির জামিন বাতিল হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার সকালে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা ১৪ জন অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলার দিন ধার্য থাকায় মঙ্গলবার বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে তাদের হাজির করা হয়।
আদালতে হাজিরের জন্য একটি প্রিজনভ্যানে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে প্রথমে ১৩ পুরুষ অভিযুক্তকে আনা হয়। এরপর একই ভ্যানে রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরই মধ্যে গত রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
গত ২৬ জুন রিফাতকে বরগুনার রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পর দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকে। পরে মিন্নির শ্বশুর তার ছেলেকে হত্যায় পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে ঘটনা নতুন দিকে মোড় নেয়।
গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর এ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পর দিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠান। রিমান্ডের তৃতীয় দিন শেষে মিন্নিকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে পুলিশ জানায়।
তার আগের দিনই পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মিন্নি হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।’
মিন্নি পরে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে। মিন্নির বাবা অভিযোগ করে আসছেন, ‘নির্যাতন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে’ মিন্নিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে পুলিশ। এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত আছে বলেও তার দাবি।
বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার পর গত ৫ আগস্ট হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ২ জুলাই এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!