বিশেষ প্রতিনিধি::
কিছুদিন আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা সদরের পোস্ট অফিস রোডের দখলবাজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রাস্তাটি উদ্ধার করা হয়েছিল। এ ঘটনায় প্রশাসনকে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন। এখন উদ্ধারকৃত সেই রাস্তা সংকুচিত করে উপজেলা প্রশাসনের রাজস্ব তহবিল থেকে স্থায়ী দোকান কোটা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ায় ক্ষুব্দ হয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তারা এ ঘটনার প্রতবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিতর্কিত কাজ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে উপজেলা সদরের সরকারি পোস্ট অফিসমুখি সড়কটি উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এই সড়ক দিয়ে সরকারি গোবিন্দ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শাহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়, বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, কৃষি ব্যাংক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটির গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে কয়েকজন ব্যবসায়ী অস্থায়ী টঙঘর বানিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। ফলে স্বাভাবিক যাতায়াত করতে সমস্যা হচ্ছিল সাধারণ মানুষের। সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুকতাদির হুসেন সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রাস্তার স্থাপনা অপসারণ করেন। কিন্তু কিছুদিন না যেতেই উপজেলঅ নির্বাহী অফিসার নিজের আগ্রহে উদ্ধারকৃত রাস্তায় তিনটি দোকানকোটা নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ক্ষমতা খাটিয়ে রাজস্ব তহবিল থেকে দোকান নির্মাণে বরাদ্দও দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ আছে। তবে অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দোকান কোটা নির্মাণ করে বরাদ্দ দেবার কথা বলে মোটা অংকের টাকাও নেওয়া হয়েছে। গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেস্তরি দিয়ে দোকান কোটা নির্মাণ করলে ঘটনাটি জনগণের দৃষ্টি কাড়ে। তারা এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন। রাস্তা সংকুচিত করে তিনটি দোকান কোটা নির্মাণ না করতে গতকাল বৃহষ্পতিবার বাজারের ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিতর্কিত এই কাজ থেকে সড়ে আসার অনুরোধ জানান। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সরকারি দোকান কোটা নির্মাণের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। সরকারি সড়ক সংকুচিত করে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সরকারিভাবে তিনটি দোকান কোটা নির্মাণের কেনই বা প্রয়োজন পড়ল এ নিয়ে কানাঘুষা চলছে উপজেলা সদরে। দোকান নির্মাণ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের বিশুদ্ধ পানিপানের জন্য স্থাপতি নলকুপটিও তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাজারের সড়ক সংকুচিত করে কেনইবা সরকারি দোকান তৈরি করছেন তা বোধগম্য নয় সচেতন মানুষদের।
গতকাল এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে দোকান কোটা নির্মাণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো আবুল কালাম, দেবল দাসসহ কয়েকজন জানান, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে বলেছি সরকারি সড়ক যাতে সংকুচিত করে সরকারি দোকান বানানো না হয়। কারণ সরকার এমন কোন আর্থিক সংকটে নেই যে দোকান ভাড়া দিয়ে চলবে। অবিলম্বে নির্মাণ প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে রাস্তাটি প্রশস্থ করে দেওয়ার দাবি জানান তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদীর হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে দখলদারদের রাস্তা থেকে উচ্ছেদ করেছি। এখন উপজেলার রাজস্ব তহবিল থেকে আমরা তিনটি দোকান কোটা নির্মাণ করছি। রাস্তা সংকুচিত করে দোকান কোটা নির্মাণ কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোকান কোটা করার পরও আরো ১৩ ফুট রাস্তা খালি থাকে। জনগণের চলাচলের রাস্তা সংকুচিত করে দোকান কোটা নির্মাণ কেন জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।