1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

আ.লীগে তিন কারণে আটকে আছে উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহীদের শাস্তি

  • আপডেট টাইম :: বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০১৯, ৯.৫৭ এএম
  • ১৫০ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচন করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও তাদের শাস্তি দেওয়া হয়নি। দলীয় সূত্র বলছে, মূলত তিনটি কারণে বিদ্রোহী প্রার্থীদের শাস্তি দেওয়া যায়নি। এই তিন কারণ হলো—১. ঢালাওভাবে যে অভিযোগ এসেছে, সময় নিয়ে সেগুলোর সত্যতা যাচাই-বাছাই করা। ২. শোকের মাস আগস্টের কারণে সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকা এবং ৩. দলের দুঃসময়ে অবদান আছে, কিন্তু ভুল তথ্যের কারণে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন, এমন বিদ্রোহীদের ক্ষেত্রে দলের শিথিল মনোভাব।
তবে সরকারি দলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সেপ্টেম্বরের শুরুতেই অভিযুক্ত বিদ্রোহীরা বহিষ্কারের চিঠি হাতে পেতে শুরু করবেন। বিদ্রোহীদের যারা সমর্থন করেছেন—তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। যারা দলের দায়িত্বশীল পদে থেকে বিদ্রোহীদের সমর্থন করেছেন, তাদের অনেককে দলীয় পদ থেকে কৌশলে সরিয়ে দেওয়া হবে। যেমন, থানা বা জেলার সম্মেলনের সময়, অভিযুক্ত থানা বা জেলার সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়কের পদটি অন্য কাউকে দিয়ে কাজ চালানো হবে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বাভাবিক নিয়মেই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড থেকে বাদ পড়বেন। আর যেসব মন্ত্রী ও এমপি বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছেন, ভবিষ্যতে তাদের (মন্ত্রী ও এমপি) মনোনয়ন না দেওয়া, কিংবা মন্ত্রী না করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে, এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ধীরে ধীরে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘শোকের মাসের কারণে উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের শাস্তির সিদ্ধান্ত এখনও আটকে আছে। তবে, সাংগঠনিক সম্পাদকরা কাজ করছেন। সেপ্টেম্বরে দলের পরবর্তী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঘোষণা আসতে পারে।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। আবার পছন্দের প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় কয়েকজন মন্ত্রী ও এমপি নিজেদের লোকজনকে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে দাঁড় করান। তাদের পক্ষে কাজও করেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রায় ২৫০ জন এবং মন্ত্রী-এমপি প্রায় ৭০ জন ও দলের নানা পদে থাকা প্রায় ৬০০ জনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে বিদ্রোহ বা বিদ্রোহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।
এ কারণে ৫ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যারা উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন, বিদ্রোহীদের পক্ষ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত হয়, যেসব এমপি-মন্ত্রী নৌকার বিরোধিতা করেছেন, বা করবেন, তাদের আগামীতে আর নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
গত ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ‘বিদ্রোহী’ ও তাদের মদতদাতদের বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের প্রথমে বহিষ্কার এবং পরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী দুই শতাধিক ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, ২৮ জুলাই থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে, যদিও সেই সিদ্ধান্ত এখনও কার্যকর হয়নি।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধে তৃণমূল থেকে কয়েক হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে অনেক মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতার নাম এসেছে। এগুলোর বিভাগওয়ারি সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব তালিকা ধরে তদন্ত চলছে।
নাম প্রকাশ না করে আওয়ামী লীগের দু’জন সাংগঠনিক সম্পাদক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তারা নিজ নিজ বিভাগের অভিযুক্তদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে রিপোর্ট দিয়েছেন। দলের কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী বৈঠকে আলোচনা শেষে শাস্তির বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।
উল্লেখ্য, পাঁচটি ধাপে অনুষ্ঠিত হয় এবারের উপজেলা নির্বাচন। মার্চ মাসে শুরু হয়ে ১৮ জুন সর্বশেষ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, পাঁচ ধাপে শেষ হওয়া ৪৭৩টি উপজেলা নির্বাচনে ১৪৯টিতে চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১৪০ জনই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী। আরও প্রায় ৬৫ জনের মতো বিদ্রোহী প্রার্থী হেরে গেছেন, যারা সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৮ বিভাগে আওয়ামী লীগের অভিযুক্ত দুই শতাধিক নেতার মধ্যে রয়েছেন—খুলনায় ৪১ জন, রাজশাহীতে ২০ জন, সিলেটে ৩২ জন, রংপুরে ২৬ জন, বরিশালে ১৭ জন, ময়মনসিংহে ২০ জন, ঢাকায় ৪৫ জন এবং চট্টগ্রামে ১৭ জনের বেশি। এছাড়া বিদ্রোহীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করার অপরাধে ৬২ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। আটটি বিভাগে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের একশ’রও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!